কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা অনিয়ম ও অবক্ষয়ের কথা শুনলে কষ্ট লাগে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
তিনি বলেন, আগের তুলনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অবক্ষয় হয়েছে সেটার সঙ্গে আমি একমত। তবে যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবক্ষয়ের কথা শুনি তখন কষ্ট লাগে। অনেক কর্মকর্তা চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। অনিয়ম হচ্ছে কিন্তু অনিয়মের ব্যাপারে কেউ ভূমিকা নিতে পারছে না।
বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘কনভারসেশন উইথ ইআরএফ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ইআরএফ সম্পাদক আবুল কাশেমের পরিচালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা। উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন, ইআরএফ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত কর্মীরা।
ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই সবাই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছি। কেউ অনেক বেশি, কেউ একেবারেই কম। কিন্তু ঋণ খেলাপি, কর খেলাপি এবং অর্থপাচার একই সূত্রে গাঁথা। ঋণ পুনঃতফসিল করার কারণে ব্যাংকে অর্থের টান পড়েছে। এ কারণে ট্রেজারি বন্ডের মাধ্যমে টাকা ছাপিয়ে অর্থ সরবরাহ করতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এর ফলে মূল্যস্ফীতি কমছে না। শক্ত হাতে খেলাপি ঋণ আদায়ও হচ্ছে না। বিষয়গুলো নীতি নির্ধারকদের বোঝানোর মতো একটা লোক প্রয়োজন, ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন দরকার।
তিনি বলেন, যখন শুনি মাত্র ১০ হাজার টাকার কৃষি ঋণ খেলাপি হলে কৃষককে জেলে যেতে হয়। কিন্তু ১০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হলে তাকে সালাম ঠুকা হয়, পাশে বসিয়ে চা খাওয়ানো হয়, এটা হতে পারে না। খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ঋণগুলো অবশ্যই আদায় করা উচিত। খেলাপি ওয়ালারা যদি অনেক বড় হয়ে যায় তাহলে সমস্যাও বড় হয়।
তিনি বলেন, ধনী গরিবের বৈষম্য আগেও ছিল। এখন ধনী ও গরিবের মধ্যে অর্থের পার্থক্য আগের তুলনায় বেড়েছে। বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থনীতি নয় রাজনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। একটি দাতা মুরুব্বির পরামর্শে সরকার ৯২ সালে স্বল্প মেয়াদি আমানত নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এটাই ব্যাংকের বড় সমস্যা। এ সমস্যার সমাধানের অনেক পথ রয়েছে। ব্যাংকিং খাতের সার্বিক সমস্যার সমাধানে ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।