ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরান। সিরিয়ার রাজধানীতে তেহরানের কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে রোববার (১৪ এপ্রিল) গভীর রাতে দুই শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইরান এই হামলা চালায়।
ইরানের এই হামলা প্রতিরোধে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, ইরানের এই নজিরবিহীন হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে মুসলিম দেশ জর্ডানও।
আমেরিকার মিত্র এই দেশটি ইসরায়েলের দিকে উড়ন্ত কয়েক ডজন ইরানি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। কয়েকটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রোববার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উত্তর ও মধ্য জর্ডান জুড়ে ইসরায়েলের দিকে হামলা চালাতে উড়ে যাওয়া কয়েক ডজন ইরানি ড্রোন জর্ডান ভূপাতিত করেছে বলে দুটি ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা সূত্রকে’ উদ্ধৃত করে জানিয়েছে রয়টার্স। মূলত জর্ডানের যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের নিক্ষেপ করা এসব ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইরানের নিক্ষেপ করা এসব ড্রোন হামলা চালাতে জেরুজালেমের দিকে যাচ্ছিল এবং পথিমধ্যেই ড্রোনগুলোকে জর্ডান উপত্যকার জর্ডানিয়ান অংশে গুলি করে ভূপাতিত করে জর্ডানের যুদ্ধবিমান।
এছাড়া অন্য ড্রোনগুলোকে ইরাক-সিরিয়া সীমান্তের কাছে আটকে দেওয়া হয় বলেও জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ওই সূত্রগুলো আর বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
এদিকে ইসরায়েলকে সমর্থন ও সহায়তা করার বিষয়ে জর্ডানকে সতর্ক করে দিয়ে ইরান।
ইরানের আধা-সরকারি বার্তাসংস্থা ফারস দেশটির একটি সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, তেহরানের প্রতিশোধমূলক হামলার সময় ইসরায়েলের সমর্থনে যে কোনও পদক্ষেপের জন্য জর্ডানকে নজরে রাখছে ইরান। এমনকি দেশটি (জর্ডান) ‘পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু’ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে ইরান।
ফারস জানিয়েছে, ‘সামরিক এই পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত একটি সূত্র বলেছে, (আমরা) ইসরায়েলে শাস্তিমূলক আক্রমণের সময় জর্ডানের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি ... এবং যদি তারা (ইসরায়েলকে সমর্থন করার জন্য) সম্ভাব্য কোনো পদক্ষেপে অংশ নেয় তবে তারা (জর্ডান) পরবর্তী টার্গেট হবে।’
অবশ্য আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে যেকোনও ইরানি বিমানকে ভূপাতিত করা হবে আগেই জানিয়েছিল জর্ডান।
জর্ডানের দুটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছিল, জর্ডানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে যেকোনও ইরানি ড্রোন বা বিমানকে বাধা দিতে ও গুলি করে ভূপাতিত করতে জর্ডানের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, জর্ডানের সেনাবাহিনীও উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং রাডার সিস্টেমের মাধ্যমে ড্রোন কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করছে।