এশিয়ার সেরা একশো বিজ্ঞানীর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই বিজ্ঞানী। তারা হলেন- সুমন চক্রবর্তী এবং সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুমন খড়্গপুর আইআইটি’র অধ্যাপক ও গবেষক। আর সঙ্ঘমিত্রা কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট’ (আইএসআই)-এর ডিরেক্টর।
সদ্য প্রকাশিত হয়েছে ‘এশিয়ান সায়েন্টিস্ট ম্যাগাজিনে’র অষ্টম সংস্করণ। ২০১৬ সাল থেকে প্রতি বছর এশিয়ায় বিজ্ঞানে অসামান্য গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীদের কথা তুলে ধরা হয় এই পত্রিকায়। এ বার সেখানে ভারতের ১৭ জন বিজ্ঞানীর কথা রয়েছে।
সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে আছেন সুমন এবং সঙ্ঘমিত্রা। গত বছর শিক্ষক দিবসে প্রেসিডেন্টের হাত থেকে উচ্চশিক্ষায় প্রথম ‘জাতীয় শিক্ষক’ সম্মান পান আইআইটির অধ্যাপক-গবেষক সুমন। তার ‘ফ্লুইড মেকানিকস অ্যান্ড থার্মাল সায়েন্স’ নিয়ে গবেষণার জন্য দেশে বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ ‘শান্তিস্বরূপ ভাটনগর সম্মান’ও পেয়েছেন। পেয়েছেন ‘ইনফোসিস পুরস্কার-২০২২’।
অন্যদিকে সঙ্ঘমিত্রা কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট’-এ ১৯৯৯ সালে মেশিন ইনটেলিজেন্স বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে ডিরেক্টর পদে উন্নীত হন। এখনও সেই পদেই আছেন। ২০২২ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে পদ্মশ্রী পান সঙ্ঘমিত্রা।
এ ছাড়াও দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার রয়েছে তার ঝুলিতে। যেমন, ভাটনগর পুরস্কার, ইনফোসিস পুরস্কার, টোয়াস প্রাইজ। বর্তমানে সঙ্ঘমিত্রা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, সফ্ট অ্যান্ড ইভোলিউশনারি কম্পিউটেশন, ডেটা মাইনিং-এর মতো বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করছেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সুমন ২০০২ সালে খড়্গপুর আইআইটিতে অধ্যাপক হয়ে আসেন। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সুমনের মূল বিষয় ‘ফ্লুইড মেকানিকস অ্যান্ড থার্মাল সায়েন্স’। ডায়াগনস্টিক, সেন্সিং ও থেরাপিউটিকসের জগতে বহু চিকিৎসা পরিষেবার যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন তিনি।
করোনার সময়ে ভাইরোলজিস্ট অরিন্দম মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে আবিষ্কার করেছিলেন স্বল্পমূল্যে করোনা পরীক্ষার যন্ত্র ‘কোভির্যাপ’। রক্তস্বল্পতা নির্ণয়ে তৈরি করেছেন ‘হিমো অ্যাপ’। নারীরা যাতে গোপনীয়তা বজায় রেখে যোনিপথের সংক্রমণের পরীক্ষা বাড়িতেই স্বল্প খরচে করতে পারেন, সেই গবেষণাতেও সাফল্য পেয়েছেন সুমন।
সুমন বলছেন, ‘আমি ধারাবাহিক ভাবে নানা গবেষণায় যুক্ত। গত কয়েক বছরে যে সম্মান পেয়েছি, তাতে আরও অনুপ্রেরণা পেয়েছি। দেশের প্রান্তিক মানুষের কথা ভেবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্ভুল পরীক্ষায় নানা প্রযুক্তির আবিষ্কার করেছি ও করছি। সে সব বিভিন্ন সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার মনে হয়, নানা সমীক্ষার পরেই এশিয়ার এই সায়েন্টিস্ট ম্যাগাজিন আমাকে বেছে নিয়েছে। এই সম্মান নিঃসন্দেহে কাজে আরও উৎসাহ জোগাবে। আনন্দবাজার